ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ই-পেপার

দুনিয়াতে জুলুমের শাস্তি নিশ্চিত

দৈনিক মার্তৃভূমির খবর
আপলোড সময় : ২৯-০৭-২০২৪ ১১:০১:৩৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২৯-০৭-২০২৪ ১১:০১:৩৯ অপরাহ্ন
দুনিয়াতে জুলুমের শাস্তি নিশ্চিত প্রতীকী ছবি

ঢাকা, ২৯ জুলাই (মনিকা সোহাগ): যার যা প্রাপ্য অধিকার সেটা থেকে কাউকে বঞ্চিত করাই জুলুম। জুলুম করা অত্যন্ত ভয়াবহ অপরাধ। পরকালে এর পরিণাম হবে অত্যন্ত কঠিন। জুলুম ঘরে-বাইরে সর্বত্র হতে পারে এবং এটি বিভিন্নভাবে হতে পারে।

 

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কেও জুলুম হতে পারে। স্ত্রীর ভরণপোষণ না দেওয়া, খোঁজ-খবর না রাখা, সামান্য কারণে মারধর করা, আকারণে সন্দেহ করা, অন্যের সামনে খোঁচা দিয়ে কথা বলা ইত্যাদি জুলুমের উদাহরণ। এ ধরনের জুলুম শারীরিক ও মানসিক উভয়ভাবেই হতে পারে।

 

অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ানোও জুলুম। কথার দ্বারা মানুষকে হেনস্থা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করাও এক ধরনের জুলুম। অনেকে জুলুমের শিকার হয়ে প্রতিবাদ করতে পারে না। সবার পক্ষে আইনের দারস্থ হওয়া, কোর্ট-কাচারি করা সম্ভব হয় না। অনেকেই মান-সম্মানের ভয়ে পারিবারিক জুলুম চেপে যায়। তবে জুলুমকারীদের পরকালে মহান আল্লাহ ধরবেন। কারণ আল্লাহর কাছে তার সব সৃষ্টি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ।

 

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "তিন ব্যক্তির দোয়া আল্লাহর কাছ থেকে ফেরত আসে না: ১. ইফতারের সময় রোজাদারের দোয়া, ২. ন্যায়পরায়ণ শাসকের দোয়া, ৩. মজলুমের দোয়া।" (তিরমিজি ৩৫৯৮)

অনেক সময় আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে, অমুক তো দিনের পর দিন মানুষের ওপর জুলুম করেই যাচ্ছে, তার তো কিছু হচ্ছে না। হজরত রাসুল (সা.) বলেন, "আল্লাহতায়ালা জালেমকে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত অবকাশ দিয়ে থাকেন। অবশেষে যখন পাকড়াও করেন তখন তাকে আর রেহাই দেন না।" (সহিহ বুখারি)

 

আল্লাহ সব চাইতে বড় ন্যায় বিচারক। তিনি জুলুম পছন্দ করেন না। কোরআন-হাদিসে অসংখ্য জায়গায় জুলুমকারীর নিকৃষ্ট পরিণামের কথা বলা হয়েছে। যেমন, কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, "আর তোমরা জালেমদের প্রতি ঝুঁকে পড়বে না, জালেমদের সহযোগী হবে না। তাহলে (জাহান্নামের) আগুন তোমাদেরও স্পর্শ করবে।" (সুরা হুদ ১১৩)

 

যে ব্যক্তি জুলুম করে অন্যের সম্পত্তি দখল করে, তার জন্যও হাদিসে ভয়ানক পরিণাম বর্ণিত হয়েছে। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি জুলুম করে অন্যের এক বিগত জমিনও আত্মসাৎ করে, কিয়ামতের দিন সাত তবক জমিন তার গলায় পরিয়ে দেওয়া হবে।" (সহিহ বুখারি ৩১৯৮)

 

আল্লাহতায়ালা জালেমদের শাস্তি দুনিয়াতেই দিয়ে থাকেন। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "দুটি পাপের শাস্তি মহান আল্লাহ দুনিয়াতেও দিয়ে থাকেন এবং আখেরাতেও দেন। তা হলো, জুলুম ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার শাস্তি।" (তিরমিজি ২৫১১)

 

প্রাত্যহিক জীবনে প্রতিটি কাজকর্মে আমাদের সতর্ক থাকা উচিত, যেন আমার দ্বারা কেউ বিন্দুমাত্র জুলুমের শিকার না হয়। ক্ষমতা থাকলে তা যেন অত্যাচারের মাধ্যম না হয়ে ওঠে। আমরা যেন মানুষের উপকারের মাধ্যম হতে পারি, সেটা মনে প্রাণে ধারণ করতে হবে। তাহলেই আশা করা যায়, আমাদের দ্বারা জুলুম হওয়ার আশাঙ্কা অনেকাংশে কমে যাবে। এরপরও যদি অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কারও প্রতি জুলুম হয়ে যায়, আমাদের উচিত তার অধিকার পূরণ করা বা তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া।


নিউজটি আপডেট করেছেন : Matribhumir Khobor

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ